An Unspoken Gita –Part 8: কৃষ্ণ ওগান্ধারীর শেষ কথোপকথন
🗣️ বন্ধুরা…
মহাভারতের যুদ্ধ শেষ।
ধূলিঝড় থেমে গেছে…
কিন্তু মানুষের বুকের ভেতর ঝড় আজও থামেনি।
কুরুক্ষেত্রের সেই সন্ধ্যায়—
রথ থেমে গেছে, অস্ত্র পড়ে গেছে,
কিন্তু এক মায়ের বুকের আর্তনাদ তখনও থামেনি।
তিনি গান্ধারী।
শত পুত্রের জননী।
আজ তাঁর কোল শুন্য… তাঁর হৃদয় রক্তাক্ত।
তিনি কৃষ্ণের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললেন—
🗣️ “হে কেশব!
আমি তো এই জন্মে কারো কোন ক্ষতি করিনি…
তবু আমাকে এই নরক যন্ত্রণা কেন দিলে?
আমার শত পুত্রকে কেন কেড়ে নিলে?”
সেই মুহূর্তে কৃষ্ণের কণ্ঠ—
মহাকালের মতো গভীর, স্থির।
🔱 কৃষ্ণ বললেন—
“হে দেবী…
আপনি ঠিকই বলেছেন, এই জন্মে আপনি কোনো পাপ করেননি।
কিন্তু এই জন্মই তো শেষ জন্ম নয়।
কর্মের ধারাবাহিকতা জন্মের পর জন্ম ধরে চলে।”
গান্ধারী বিস্ময়ে স্থির—
“আমি? পাপ?”
কৃষ্ণ শান্ত স্বরে বললেন—
🌼 একশো জন্ম আগে
আপনি কৈশোরে ১০০ প্রজাপতি ধরে
তাদের চোখে ঘাসের শীষ ঢুকিয়ে
নৃশংসভাবে মেরে ‘বিয়ে খেলা’ খেলেছিলেন।
তাদের যন্ত্রণা—
তাদের আর্তনাদ—
এই মহাবিশ্ব মনে রেখেছিল।
সেই ১০০ প্রজাপতিই
আজ আপনার ১০০ পুত্র হয়ে জন্ম নিয়েছে—
যেন আপনি বুঝতে পারেন—
অন্যের সন্তানের প্রাণ নেওয়ার যন্ত্রণা কেমন।”**
গান্ধারী হতবাক।
একশো জন্ম আগের ভুল আজ শাস্তি হয়ে ফিরে এলো!
🌟 তখনই শ্রীকৃষ্ণ বললেন—
এই জগতে তিন প্রকার কর্ম রয়েছে…
🎯 এই তিন কর্মই ঠিক করে দেয়—
👉 আপনি কে, আপনার ভবিষ্যৎ কী,
👉 আর কেন আপনার জীবনে ঘটে নির্দিষ্ট কিছু…
🔹 ১. ক্ৰিয়মাণ কর্ম –
এই জন্মে, এই মুহূর্তে আপনি যা করছেন…
আপনার ভাবনা, কথা ও কাজ…
👉 এ হলো বর্তমান জীবনের কর্ম, যা আপনি প্রতিদিন করছেন –
আপনার ভাবনা, কথা ও কাজ—এই তিনই ক্ৰিয়মাণ কর্মের অন্তর্ভুক্ত।
যেসব কাজ আমরা করছি, যার ফল কিছুদিনের মধ্যেই পাই।
Immediate result received against our work.📌
💥 এটাই আপনার Present Karma।
এই ফল তৎক্ষণাৎ বা কয়েক দিনের মধ্যেই আপনার জীবনে ফিরে আসতে পারে।
✨ মনে রাখবেন, ক্ৰিয়মাণ কর্ম পরিবর্তনশীল। আপনি যেভাবে বাঁচবেন, সেভাবেই বর্তমান ভবিষ্যৎ গড়বে।
📌 এর ফল আপনি শীঘ্রই পাবেন—
ভালো হলে ভালো ফল… খারাপ হলে ততটাই কষ্ট!
🔹 ২. সঞ্চিত কর্ম –
পূর্বজন্মে বা এই জন্মে যা যা করলাম, সব মিলে একটা ভাণ্ডার তৈরি হয়।
👉 এটা হলো আপনার সমস্ত জন্মের সমস্ত কাজের মিশ্র ভাণ্ডার। এতে আপনার এই জন্ম, পূর্বজন্ম ও অন্যান্য জন্মের সব ভালো ও খারাপ কাজ জমা থাকে। এগুলো এক প্রকার স্টোরেজ বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর মতো।Spiritual Bank Account 🏦
🔹 উদাহরণ: ধরুন, ৫ জন্ম আগে আপনি একজন দয়ালু ঋষি ছিলেন, বহু মানুষকে সাহায্য করেছেন। তার ফল জমা আছে। আবার, অন্য এক জন্মে আপনি অন্যায়ভাবে কারো ক্ষতি করেছেন, সেটাও জমা আছে।
📌 এই সঞ্চিত কর্মের ফল সব একসাথে আসে না। এগুলো পরে ব্যবহার হয়, যখন প্রারব্ধ কর্মে রূপান্তর হয়।
✨ মনে রাখবেন, সঞ্চিত কর্ম আমাদের ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি করে। ভালো সঞ্চিত কর্ম মানে ভালো সম্ভাবনা।
🔹 ৩. প্রারব্ধ কর্ম –
👉 এটি হলো সঞ্চিত কর্মের একটি অংশ, যা এই জন্মে ফলভোগ করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।এটাই তোমার ভাগ্য।” এটা সেই নির্ধারিত কর্মফল, যা এই জীবনে আপনাকে ভোগ করতেই হবে।
🔹 উদাহরণ: ধরুন, আপনি এমন এক পরিবারে জন্মেছেন যেখানে প্রচুর টাকা আছে, কিন্তু আপনি জন্মসূত্রে অসুস্থ। এটি আপনার প্রারব্ধ কর্ম— হয়তো পূর্বজন্মের কোনো অন্যায় কাজের ফল, যা এখন আপনাকে ভোগ করতে হবে।
📌 এই কর্ম পরিবর্তন করা যায় না, আপনি তা থেকে পালাতে পারবেন না। যেমন – জন্মস্থান, পরিবার, দেহের গঠন, মৃত্যুর সময় ইত্যাদি।
✨ মনে রাখবেন, প্রারব্ধ কর্ম ভোগ্য— সেটা ভালো হোক বা খারাপ, আপনাকে পোহাতে হবে।
🌌 বন্ধুরা,
এই কাহিনী আমাদের শেখায় —
👉 “এক মায়ের কান্না, এক নিরীহ প্রাণীর আর্তি — কখনো ছোট নয়!”
👉 “অন্যায় কখনোই নিস্তব্ধ হয় না — তা ফিরে আসে ধ্বংসের তাণ্ডব নিয়ে!”
👉 আর অভিশাপ? তা যেন সময়ের ভেতর ঘুমিয়ে থাকে, আর জেগে ওঠে তখন — যখন আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে যায়… 🕯️💥
👇👇
তুমি কি বিশ্বাস করো —
❓ অভিশাপ সত্যি হয়?
❓ কর্মফল ফিরেই আসে?
তোমার মত জানাও কমেন্টে 🗣️
🎙️ এটাই ছিল আজকের পর্ব — ‘🔱 An Unspoken Gita 🔱’ সিরিজের এক গভীর, জ্বলন্ত সত্য…
📍 Next Episode:
শ্রীকৃষ্ণ ও মৃত্যু শয্যায় শুয়ে থাকা এক পুরুষ ভীষ্মের শেষ কথোপকথন