The Unforgettable Hero:The True Power of ছোলা মুরগি
বন্ধুরা,
আজ আমি তোমাদের শোনাতে চলেছি এক অদ্ভুত বন্ধুর গল্প, যার নাম যেমন উদ্ভট, তেমনই তার কীর্তি।
তার নাম পিনাকি মণ্ডল, আমাদের BE কলেজের মাইনিং ডিপার্টমেন্টের একজন ছাত্র। কিন্তু এই গল্প শুধু তার নাম বা বিভাগের নয়, এটা একটা জীবনের শিক্ষা, যা আমাদের সবাইকে কিছু না কিছু ভাবতে বাধ্য করবে।
চলো, তবে ডুব দিই ২০০১ সালের সেই BE কলেজের দিনগুলোতে, যখন আমাদের হাতে সময় ছিল অফুরন্ত, আর বিনোদনের উপকরণ ছিল সীমিত।
হোস্টেল রুম: আমাদের রিসার্চ ল্যাব
২০০১ সাল। তখন আমরা প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমার হোস্টেল নাইনের রুম ২১২ ছিল একটা জমজমাট জায়গা। এটা কোনো সাধারণ ঘর ছিল না, বরং একটা রিসার্চ ল্যাবের মতো হয়ে উঠেছিল, যেখানে আমরা বন্ধুরা মিলে নানা উদ্ভট আলোচনা আর Innovation নিয়ে মেতে উঠতাম।
হঠাৎই একদিন সেই ল্যাবে আমাদের operational টেবিলে উঠে এলো পিনাকি মণ্ডলের কেস ।তারপর শুরু হলো সেই legendary কাজ—deep research work. শুরু হলো গভীর আলোচনা, চুলচেরা বিশ্লেষণ, endless brainstorming.
আমাদের গভীর আলোচনা আর চুলচেরা বিশ্লেষণের মাঝে একজন বন্ধু হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল,
“পিনাকির চেহারাটা একটু মন দিয়ে দেখেছিস? ঠিক যেন মুরগির চামড়া ছাড়ালে যেমন দেখায়, একদম সেরকম!”
সেই তথ্য পাবার সাথে সাথে অর্ধ ঘুমন্ত ,খাটে ল্যাদ খাওয়া অবস্থা থেকে তিরিং করে লাফিয়ে উঠে শ্যামল মণ্ডল, বলল, “ইউরেকা! ইউরেকা! পেয়ে গেছি! আজ থেকে এর নাম ‘ছোলা মুরগি’!”
আমাদের হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট, কুনাল সঙ্গে সঙ্গে এই নামে সিলমোহর দিয়ে দিল। ব্যাস, সেদিন থেকে পিনাকি মণ্ডল হয়ে গেল আমাদের ‘ছোলা মুরগি’। এই নাম তাকে আজও বয়ে বেড়াতে হয়, আর ভবিষ্যতেও বয়ে বেড়াতে হবে।
ফাইনাল ম্যাচ: একটি অবিস্মরণীয় লড়াই
এবার স্কিপ করে চলে যাই আমাদের কলেজ জীবনের একটা মাহেন্দ্রক্ষণে—চতুর্থ বর্ষের ইন্টার-হোস্টেল ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচে। Rich বনাম Wolf । এই ম্যাচ আমাদের কাছে ছিল শুধু খেলা নয়, এটা ছিল আত্মসম্মান, প্রতিশোধ, আর লড়াইয়ের মঞ্চ। একটা Do or Die ম্যাচ, যেখানে জিততেই হবে—যে কোনো মূল্যে। কিন্তু দুই দলের মনোভাব ছিল—‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী’।
সেদিন পুরো কলেজ মাঠে হাজির ছিল। সবার নজর ছিল মাঠের মাঝে খেলা ২২ জন খেলোয়াড়ের ওপর। উত্তেজনা, লড়াই, আর ঝামেলার মধ্যে দিয়ে ম্যাচ গড়ালো একটা নির্ণায়ক মুহূর্তে। রেগুলার টাইম শেষে ফলাফল ছিল ১-১। তাই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হবে পেনাল্টি শুটআউটের মাধ্যমে।
স্টেডিয়ামে দাঁড়ানো হাজারো ছাত্র, আকাশ ফাটানো চিৎকার, tension এ জমাট atmosphere।
কিন্তু এই হাই-টেনশন ম্যাচের ফাইনাল মুহূর্তে আমি, মানে রিচ হলের গোলকিপার “DhOliver Kahn, মনে মনে ভয় আর সন্দেহে ভরে গিয়েছিলাম before pentaly shootout। আমার আত্মবিশ্বাস টলে গিয়েছিল। কারণ ছিল আমার নিজের রিফ্লেক্স, গতি, আর নির্ভুলতা নিয়ে আমার নিজেরই সন্দেহ। আমি ভাবছিলাম, এই চাপের মুহূর্তে আমি কি পারব?
এই মুহূর্তে আমার অবস্থা ছিল রামায়ণের অঙ্গদের মতো। মনে আছে, অঙ্গদ বলেছিল, “আমি হয়তো লঙ্কায় পৌঁছে যাব, কিন্তু ফিরে আসতে পারব কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।” সেই সন্দেহের কারণেই অঙ্গদ লিজেন্ড হতে পারেনি। তার জায়গায় এগিয়ে এসেছিল মহাবীর হনুমান, আর বাকিটা ইতিহাস। হনুমান বাজিমাত করে সবার মনে জায়গা করে নিয়েছিল।
ছোলা মুরগির ম্যাজিক
ঠিক তেমনই, আমাদের সেই ফাইনাল ম্যাচে ঘটল এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। পেনাল্টি শুটআউটের সময় আমাকে Confused আর আত্মবিশ্বাসহীন দেখে ছোলা মুরগি নিজেই এগিয়ে এলো। গোলকিপিংয়ের গ্লাভস হাতে নিয়ে সে বলল, “আমি ফেস করব!” তার চোখে ছিল অদ্ভুত আত্মবিশ্বাস, অটল সংকল্প। সে যেন বলছিল, “আমি একাই সব রুখে দেব!”
কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, ছোলা মুরগি তো রেগুলার ফুটবল প্র্যাকটিস করত না। খেলাধুলোয় তেমন পারদর্শীও ছিল না। আমি তাকে আগে কখনো গোলকিপিং করতে দেখিনি। তবু সেদিন তার মধ্যে কী অলৌকিক শক্তি জেগে উঠেছিল, তা আজও আমার কাছে রহস্য।
সে যাই হোক, ছোলা মুরগি তার কথা রেখেছিল। পেনাল্টি শুটআউটে সে অসাধারণ কিছু করে দেখিয়েছিল।
Penalty শুরু হলো… একের পর এক শট হচ্ছে।
আমাদের দলের গায়ে চাপা পড়ছে ভয়।
🎯 ফাইনাল পেনাল্টি:
কিন্তু তখনই ছোলা মুরগি এগিয়ে এল।
সে বলল – 👉 “This is my kick, this is my moment!” ⚡
মাঠে সবার চাহনি হঠাৎ একজায়গায় থেমে গেল – ছোলা মুরগির ওপর।
সে আগে কখনো এমন চাপপূর্ণ মুহূর্তে খেলেনি, কিন্তু তার চোখে ছিল 🔥 আগুন।
শেষে এল সেই ফাইনাল পেনাল্টি।
👉 রিচ হলের শেষ আশা…
ছোলা মুরগি এগিয়ে গেল বলের দিকে।
রান-আপ… পুরো মাঠের দর্শক নিঃশ্বাস বন্ধ করে তাকিয়ে আছে। 🫨
⚡ এক শটে ছোলা মুরগি বলটা মারল…
বল 🚀 উড়ে গেল সোজা নেটে ঢুকে!
“GOOOOAAALLL!!!” –
পুরো মাঠ কেঁপে উঠল বজ্রধ্বনির মতো চিৎকারে। 🌩️
👉 উলফ হলের স্বপ্ন মুহূর্তেই ভেঙে গেল।
👉 আর রিচ হয়ে গেল ইন্টার-হোস্টেল চ্যাম্পিয়ন! 🏆
ছোলা মুরগি রিচ হলকে এনে দিয়েছিল সেই কাঙ্ক্ষিত জয়। সেদিন উলফ হলের ফেয়ারওয়েল পার্টি মাটি হয়ে গিয়েছিল, আর সেদিন জন্ম নিল আমাদের এক সত্যিকারের নায়ক ,লিজেন্ড – ছোলা মুরগি। 🐓✨
জীবনের শিক্ষা
বন্ধুরা, ক্লাসরুম, সেমিনার, Text Book – এগুলো থেকে আমরা অনেক কিছু শিখি,কিন্তু আমি কলেজের ক্লাসরুম, ফরমাল education থেকে বড় কিছু শিখিনি।
কিন্তু বন্ধুদের কাছ থেকে, খেলার মাঠ থেকে, জীবনের এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলো থেকে আমরা যে শিক্ষা পাই, তা আমাদের জীবনকে গড়ে দেয়।
ছোলা মুরগির সেই অদ্ভুত আত্মবিশ্বাস আমাকে শিখিয়েছে একটি জিনিস—
তুমি অন্যদের কী বলছ, তুমি বাইরের জগতকে কী দেখাচ্ছ, তা খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তুমি নিজেকে কী বলছ।
তুমি যখন একা, তখন নিজের সঙ্গে যে কথা বলছ, তুমি নিজের সম্পর্কে যা বিশ্বাস করছ, সেটাই তোমার জীবনে ঘটতে শুরু করে। তোমার কাজ, তোমার শক্তি, তোমার আত্মবিশ্বাস—সবকিছু আসে সেই ভেতরের কণ্ঠস্বর থেকে। তুমি নিজেকে যা বলবে, তুমি তাই হয়ে যাবে।
তোমার চোখে যদি সেই আত্মবিশ্বাসের আলো জ্বলে, তোমার মধ্যে যদি সেই জ্বালাময়ী উৎসাহ থাকে, তাহলে তুমি আর কিছু না করলেও সেই শক্তি বাইরে ছড়িয়ে পড়বে।
যদি তুমি নিজের ভিতরে বলো – “I can do it”,
তাহলে একদিন তুমি করবেই।
✅ তুমি যদি নিজেকে ছোট ভাবো – তুমি ছোটই থাকবে।
কিন্তু তুমি যদি নিজেকে সিংহ 🦁 ভাবো –হয়তো বাস্তবে তুমি একটা বেড়াল,কিন্তু যদি তুমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করো যে তুমি একটা সিংহ, তাহলে তোমার কাজ, তোমার মনোভাব, সবকিছু হবে সিংহের মতো।
তাহলে পৃথিবীও তোমাকে সিংহ বলেই মানবে।

ছোলা মুরগির প্রভাব
এই শিক্ষা আমাকে জীবনে অনেক দূর নিয়ে গেছে।
যখন আমি Sales & Marketing থেকে Manufacturing field-এ Plant Head হওয়ার সুযোগ পেলাম—
সেই সময় ছোলা মুরগির অটল আত্মবিশ্বাস আমাকে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত করেছিল।
👉 একটা অজানা লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার,
👉 আর তাতে Champion হয়ে ওঠার শক্তি জুগিয়েছিল।
তাই আমার কাছে ছোলা মুরগি শুধু একজন বন্ধু নয়,
সে আমার চিরকালের Hero। 🏆
তার গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়—
জীবনে সাফল্য পেতে হলে প্রথমে নিজের উপর ভরসা করতে হবে।
তুমি নিজেকে যা বলবে, তুমি তাই হবে।
বন্ধুরা, এই গল্প থেকে শিক্ষা নাও। মনে রেখো –
👉 Self-Belief is the ultimate Game Changer.
🔥 নিজের মধ্যে সেই আগুন জ্বালাও।
🔥 নিজের মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাস জাগাও।
🔥 চোখে Confidence-এর আলো ধরো।
🔥 আর পৃথিবীকে প্রমাণ করে দাও – তুমি ordinary নও, তুমি extraordinary।
কারণ…
👉 “তুমি যদি নিজেকে সিংহ ভাবো, পৃথিবীও তোমাকে সিংহ বলেই মানবে।” 🦁
🫡 Salute to ছোলা মুরগি.
🫡 Salute to all the ‘মুরগি’ of the world —
যারা তাচ্ছিল্যের মধ্যেও নিজের Best দিতে পিছপা হয় না।
🌟 A small tribute to ছোলা মুরগি —
From his batchmate,
Dhol 🖋️