Corporate Daduji

A Corporate Daduji’s Creation

So Close Yet So Far

কবিতার ছোঁয়া এবং বাস্তব জীবনের গল্প-মাসিমার ঝুলির গল্প :


বন্ধুরা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই কবিতাটি মনে পড়ে?

“বহু দিন ধ’রে বহু ক্রোশ দূরে

বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে

  দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,

         দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া

  একটি ধানের শিষের উপরে

         একটি শিশিরবিন্দু।

আজ আমি আপনাদের এমন এক ছেলের গল্প শোনাব, যে তার জীবনের বাস্তবতায় এই কবিতার মর্মার্থ উপলব্ধি করেছিল।


Real Story of Tamal

Once upon a time, কোন এক সময় in BE College Shibpur ,এক ছেলে ছিল, নাম তমাল।

সে ছিল একজন প্রতিভাবান, dedicated to work) এবং Hardworking Professional.

তমাল ১৪ বছর ধরে একই কোম্পানিতে কাজ করছিলেন। প্রতিটি দিন ছিল কঠোর পরিশ্রমে ভরা, তবে সেই পরিশ্রমের মধ্যেই তার এক সুপ্ত স্বপ্ন ছিল—তিনি একজন উচ্চপদস্থ official হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, তার সেই স্বপ্ন ,চাওয়া যেন এক জায়গায় আটকে ছিল।

কষ্টের পর কষ্ট, প্রার্থনা আর অপেক্ষার পরও, তিনি যা চেয়েছিলেন, তা তাকে তার বর্তমান কোম্পানিতে কখনোই মেলেনি।

তাহলে, একদিন সে সিদ্ধান্ত নিল, “কোথাও না কোথাও নতুন সুযোগ ঠিক আমার জন্য অপেক্ষা করছে!”


কিন্তু, এমন কি হয়েছিল?

প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সে নিজেকে প্রস্তুত করতো, সঠিক C.V. বানাতো, প্রত্যেকটি ইন্টারভিউয়ের জন্য সময় দিয়ে প্রস্তুতি নিতো।

তবে কি ফল পেয়েছিল সে?

না.

কোনো ভালো কোম্পানির থেকে একটিও ইন্টারভিউ কল সে পায়নি! কঠোর পরিশ্রম, সময় এবং আশা—সব কিছু দিয়েও তার সামনে কোনো আশার আলোর দেখা যাচ্ছিল না।

তমাল কি ভুল করছিল? তার পরিশ্রমই কি যথেষ্ট ছিল? কেন সে সফল হতে পারছিল না?

প্রশ্নগুলো তার মনের মধ্যে গভীরভাবে ঘুরপাক খাচ্ছিল। তার মনে বারবার উঠে আসছিল একটি প্রশ্ন:

“যদি সব কিছু ঠিকভাবে করি, তবে কেন আমি এগোতে পারছি না?”

এটাই কি সেই প্রশ্ন, যা আমরা সবাই কখনো না কখনো অনুভব করি? যখন আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু কিছুতেই কিছু বদলাচ্ছে না?

এই পথে কি আর কোনো আলো রয়ে গেছে? তমাল কি পাবে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য? অথবা, তার জন্য কি সত্যিই কোনো উপায় রয়ে গেছে?

এটাই কি শেষ? নাকি, তার জীবনের পরবর্তী অধ্যায়েই কিছু বড়, অজানা ঘটনা ঘটতে চলেছে?

যখন আমরা খোঁজে বেরাতে থাকি, কখনো কখনো আমরা দেখি, সেই কাঙ্ক্ষিত উত্তরগুলো আমাদের হাতের কাছেই লুকিয়ে থাকে, কিন্তু কিভাবে? তার উত্তরের খোঁজে চলুন—”মাসিমার ঝুলি”-র গভীরে।

নিজের কেরিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন, অনেক বড় বড় মানুষের সাহায্য চেয়েছেন, কিন্তু ফলাফল শূন্য।

তাঁর ভাবনা ছিল, বড় মানুষেরাই তাঁর কেরিয়ারে সাহায্য করতে পারবে। তাই তাঁর পুরোনো সহপাঠী বা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা কখনোই তাঁর মাথায় আসেনি।

তমাল থমকে দাঁড়িয়ে গেল। অনেকক্ষণ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে, সে এক গভীর উপলব্ধি পেল। সেদিন সে বুঝল, জীবনের মানে খুঁজতে সে অনেক দূরে দূরে ঘুরেছে, কিন্তু আসল সৌন্দর্য, আসল রিসোর্স তো তার নিজের চারপাশেই ছিল। শুধু, সেগুলো দেখার মতো চোখ ছিল না। জীবনের মূল শক্তি, বন্ধন, সমর্থন, সবই হয়তো তার হাতের নাগালেই ছিল, কিন্তু সে চোখে তা দেখতে পায়নি।


গল্পের সেই মোড়

তমাল বহুদিন পর একদিন তার পুরোনো কলেজের একটি খুব কাছের বন্ধুর কথা মনে পড়ল। সেই বন্ধু, যার সাথে একসময় তার সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সব শেয়ার করত। একসময় যাকে ছাড়া সে নিজের জীবন ভাবতেই পারত না। কিন্তু আজ, বহু বছর পরে, তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগই ছিল না।

জীবনের এই কঠিন সময়ে, সেই পুরোনো বন্ধুত্বের কথা মনে পড়তেই তমাল এক অদ্ভুত অনুভূতি পেল। একদিকে অজানা ভয়, অন্যদিকে পুরনো বন্ধুদের স্মৃতি—তার মনে একটা ধাক্কা লাগল। সে বুঝতে পারল, কখনো কখনো পুরোনো সম্পর্কই নতুন পথে আলো দেখাতে পারে।

তবে, সে সিদ্ধান্ত নিল, “এটা তো একটা সুযোগ হতে পারে, কেন না চেষ্টা করলে কিছুতেই হারানো যায় না।”


বন্ধুর সাথে আবার Connection

তমাল ফোনটি তুলে নিল। কিছুটা সংকোচ নিয়ে, অনেকটা সময় নষ্ট করে, অবশেষে সে পুরোনো বন্ধুকে ফোন করল। অনেক বছর পর, সেই বন্ধুর সাথে কথা বলার প্রস্তুতি নিতেই তার হাতে যেন সময় থেমে গিয়েছিল। তার কণ্ঠে একটু উত্তেজনা ছিল, কিন্তু তার ভেতরকার দুঃখ ও অভিমান অনেকটা গলা চেপে ধরেছিল।

অবশেষে, সে ধীরে ধীরে কথা বলা শুরু করল, যেন সময় আর অভ্যস্ততা তাকে নতুন করে শেখাচ্ছিল। তার চোখে ছিল দীর্ঘদিনের জমে থাকা দুঃখ আর কষ্ট। তার মনেও ছিল এক অজানা ভয়—কী জানি, এত বছর পর তার বন্ধু তাকে আগের মতো গ্রহণ করবে কিনা।

তবে, আশ্চর্যজনকভাবে, তার বন্ধু তাকে ঠিক আগের মতোই ভালোবাসা এবং খোলামেলা মনোভাব দিয়ে গ্রহণ করল। বন্ধুটি তার কথা মন দিয়ে শুনল। কোনো অভিযোগ বা বিচার নয়, শুধু বোঝার চেষ্টা করল। বন্ধুর সেই আন্তরিকতা দেখে, ছেলেটি ধীরে ধীরে নিজের জীবনের সব কথা খুলে বলল। তার কষ্ট, তার ব্যর্থতা, তার একাকিত্ব—সব।

আহ্বানের হাত

বন্ধুটি ছেলেটির দিকে সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিল। বলল, “তুই একা নস। জীবনে সবকিছুর সমাধান আছে, শুধু একটু সময় লাগে। আমি তোর পাশে আছি।”


বন্ধুত্বের শক্তি

এটাই বন্ধুত্বের আসল রূপ। যখন জীবন আপনাকে সব দিক থেকে পরাজিত করতে চায়, তখন একজন প্রকৃত বন্ধু আপনাকে নিজের সমস্ত কষ্ট ভাগ করে নিতে সাহায্য করে। সেই মুহূর্তে, ছেলেটি বুঝতে পারল, দেরিতে হলেও, সে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বন্ধুর সেই সাহায্য, তার ভালোবাসা, আর বিশ্বাস ছেলেটিকে নতুনভাবে জীবন শুরু করার শক্তি দিল।

বন্ধুরা মিলে একে অপরের পাশে দাঁড়াল। নতুন লক্ষ্য, নতুন স্বপ্ন, আর অধ্যাবসায় দিয়ে তারা একসঙ্গে জীবনকে নতুন করে সাজাতে শুরু করল।

Life is not that much easy. যদিও সবকিছু সহজ ছিল না।

কখনো কখনো তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হত। কিন্তু তারা হাল ছাড়েনি। ধৈর্য আর অধ্যাবসায়ের সাথে তারা তাদের লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে গেল।

জীবনে “কাল ফল মেলে”—একটা সময় তাদের প্রচেষ্টা সফল হলো। ছেলেটি আর একা ছিল না। তার জীবনে নতুন আলোর দিশা এনে দিল সেই বন্ধুত্ব, যা সে একসময় অবহেলা করেছিল।


Moral of this real story .শিক্ষা কী পেলাম?

আমরা অনেক সময় জীবনের সমাধান খুঁজতে দূরে চলে যাই। অন্যদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়াই। কিন্তু আমাদের জীবনের আসল শক্তি, আসল সমাধান, অনেক সময় আমাদের খুব কাছেই থাকে—আমাদের পরিবার, আমাদের বন্ধুরা।

রবীন্দ্রনাথের সেই লাইন বারবার মনে পড়ে:
“দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,.

দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া.

ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া.

একটি ধানের শিষের উপরে. একটি শিশিরবিন্দু।

বন্ধুরা, এই গল্পটি আমাদের শেখায়:

জীবনে যতই দুঃখ বা কষ্ট আসুক, সেগুলো জমিয়ে রাখবেন না। নিজের কাছের মানুষদের সাথে শেয়ার করুন।কাছের সম্পর্কগুলোকে অবহেলা করবেন না।
দুঃখ-কষ্ট ভাগ করলে তা হালকা হয়ে যায়।
বন্ধুত্বের শক্তি অসীম। একটি সত্যিকারের বন্ধু আপনার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়েও আলো এনে দিতে পারে।ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব বা সম্পর্কই জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ।
দেরিতে হলেও, সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।
তাই, যদি আপনার জীবনেও এমন কোনো বন্ধু থাকে, যাকে আপনি ভুলে গেছেন বা যাকে অনেকদিন ধরে দেখেননি, তাহলে আজই তার সাথে যোগাযোগ করুন। আপনার জীবন হয়তো বদলে যাবে সেই বন্ধুত্বের স্পর্শে।

মাসিমার ঝুলির পরবর্তী গল্প শুনতে চোখ রাখুন। আর জীবনকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখুন। ধন্যবাদ।