Find Your Inner Hanuman:কীভাবে আপনার ভেতরের বিপুল লুকানো শক্তি উন্মোচন করবেন
আজ মাসিমার ঝুলি থেকে বেরিয়ে আসছে এক রহস্যময় গল্প, এক অবিশ্বাস্য যাত্রা! আপনি কি প্রস্তুত? যদি হ্যাঁ, তবে আসুন, এক নতুন দুনিয়ার দরজা খুলে দেখি, যেখানে আপনার অজানা শক্তি আর সম্ভাবনা উন্মোচিত হবে!
আমরা সবাই ছোটবেলায় রামায়ণের হনুমান ও জাম্বুবানের গল্প শুনেছি। সেই গল্পে জাম্বুবান, হনুমানকে তার অজানা শক্তি এবং অসীম সম্ভাবনার কথা মনে করিয়ে দেন। তখনই হনুমান নিজের শক্তি খুঁজে পায় এবং একের পর এক অবিশ্বাস্য কাজ করে।
এখন, যখন সময় বদলে গেছে, তখনকার সেই পুরানো জাম্বুবান আর হনুমান আজকের শহরের অন্দরে লুকিয়ে আছেন এক নতুন রূপে।
জাম্বুবান আর ভাল্লুকের মতো দেখতে নয়, আর হনুমানও সেই বানরের মতো নয়।
আর আজকের মাসিমার ঝুলির এই গল্পে, আমরা চলেছি সেই নতুন, আধুনিক হনুমান এবং জাম্বুবানের রহস্য উন্মোচনের পথে।
চলুন, শুরু করি এক অদ্ভুত, অবিশ্বাস্য যাত্রা!

Disclaimer: Some parts of this story have been changed to keep things private. The names used are not real and have no connection to anyone. If they match with anyone, it is just a coincidence.
Chapter 1: “হনুমান্তের অজানা শক্তির সন্ধান”
(Hanumanta’s Discovery of Hidden Strength)
গল্পটা শুরু হয় হাওড়ার এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। কলেজের নাম শিবপুর BE কলেজ।
সেই কলেজে গ্রামের একটি ছেলে মেটালার্জি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়।
ছেলেটির নাম ছিল হনুমান্ত দাস।
সে ছিল একদম সাধারণ ছেলে—শান্ত, ইন্ট্রোভার্ট, আর খুব বেশি কথা বলতো না।
তখনকার দিনে কলেজে জুনিয়র-সিনিয়রদের মধ্যে বেশ ঘনিষ্ঠ কথোপকথন হতো। কখনো তা হতো বুদ্ধিদীপ্ত ও জ্ঞানমূলক, আবার কখনো সেই কথোপকথন ভুল পথে গিয়ে পড়ত। মানুষ এটিকে অনেক সময় “র্যাগিং” বলত।
একটা ছোট্ট ঘটনায় কিভাবে বদলে যেতে পারে একটা সাধারণ ছেলের জীবন?
সেই ছেলেটি—হনুমান্ত, যে একদম সাধারণ গ্রাম থেকে উঠে আসা।
তার কাছে বড় কোনো স্বপ্ন ছিল না।
কিন্তু… একদিন… হ্যাঁ, একদিন,
তার জীবনের ঘড়ির কাঁটা বদলে গেল।
তাহলে কী ঘটেছিল সেদিন?
সেদিন ফ্রেশার্স ওয়েলকামের ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে,
সবার সামনে হনুমান্ত পরিবেশন করল একটা বিশেষ Remake of লক্ষ্মীর পাঁচালি।
আরে মশাই, পরিবেশনটা এমন মজার আর প্রাণবন্ত ছিল যে,
সিনিয়ররা হেসে কূল পাচ্ছিল না।
সবার মুখে ছিল হাসি, আনন্দ আর প্রশংসা।
অধ্যায় ২: “হনুমান্তের ভেতরের কবি জাগ্রত হয়”
এই ছোট্ট ঘটনাটা যেন হনুমান্তের জীবনে একটা দরজা খুলে দিল।
সিনিয়রদের সেই প্রশংসা আর বন্ধুবান্ধবদের উৎসাহ যেন ওর ভেতরে এক নতুন আগুন জ্বালিয়ে দিল।
তারপর? এরপর কী হলো জানেন?
হনুমান্ত ধীরে ধীরে নিজের ভেতরের ভালোবাসাটা খুঁজে পেল।
সে ছোটবেলা থেকেই কবিতা আর ছড়ার প্রেমিক ছিল।
প্রথম দিকে, সে নিজের কোনো সৃষ্টি করতে পারত না। অন্যদের লেখা ধার করে তা আবৃত্তি পরিবেশন করত। কিন্তু ধীরে ধীরে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, সে এই শিল্পের কৌশল শিখে ফেলে।
তার লেখার প্রতি ভালোবাসা বাড়তে থাকে, আর নিজের চিন্তাভাবনা শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করার সাহস খুঁজে পায়।
তাহলে কি এই “কবি” হওয়া শুধুই একটি শখ ছিল, নাকি তার জীবনের আরও বড় কিছুর ইঙ্গিত?
পরবর্তী অধ্যায়ে সেই উত্তরের খোঁজে চলুন মাসিমার ঝুলির গভীরে।
অধ্যায় ৩: কিভাবে হনুমান্ত দাস হয়ে উঠলেন নন-ভেজ কবি
চলুন, সময়ের চাকা ঘুরিয়ে ফিরে যাই ২০০১ সালে।
তখন আমাদের জীবন ছিল একেবারে অন্যরকম।
আজকের মতো উন্নত প্রযুক্তি, স্মার্টফোন বা বিনোদনের হাজারো বিকল্প তখন ছিল না।
কিন্তু, মজার ব্যাপার কী জানেন?
ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্ররা সবসময়ই কিছু না কিছু খুঁজে নিত মজা করার জন্য!
যদিও সেই সময়ে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার অভাব ছিল,
তারা ঠিকই নতুন নতুন উপায় বের করত নিজেদের আনন্দ আর বিনোদনের জন্য।
আসলে, তখন থেকেই তো আমাদের সেই পুরোনো প্রবাদটি সত্যি হয়ে যায়:
“প্রয়োজনই আবিষ্কারের জননী।”Necessity is the mother of invention.”
এবার আসুন, সেই প্রয়োজন থেকেই কিভাবে সৃষ্টিশীলতার জন্ম হয়েছিল, সেটা আপনাদের বলি।
এক অনন্য চরিত্রের উত্থান:
সেই সময়ে বাংলায়, বিশেষ করে শিবপুর BE কলেজে,
ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রদের মধ্যে নন-ভেজ (Non Veg) খাবারের প্রতি ছিল এক অদ্ভুত আকর্ষণ।
শাকাহারী খাবার(Veg)? তার কোনো গুরুত্বই ছিল না।
আর যারা শাকাহারী (Vegetarian) ছিল? তাদের অবস্থান ছিল একেবারে “ব্রাত্য”।
এই পরিবেশে, একজন ছাত্র তার পরিবেশনা আর সৃজনশীলতার মাধ্যমে
নন-ভেজ খাবারের প্রতি এই ভালোবাসাকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিল।
সে যেন নন-ভেজ থিমের এক শিল্পী হয়ে উঠল।
তবে প্রথমে সে কী করত?
সে অন্যদের লেখা পড়ত, শুনত, আর সেই লেখাগুলোকেই
তার পরিবেশনার মাধ্যমে সবার সামনে উপস্থাপন করত।
কিন্তু… এখন?
এখন তার মন চাইছিল আরও বেশি কিছু।
তার মনে হতে লাগল, “আরে, আমি যদি নিজেই কিছু লিখতে পারি?”
আর তখনই শুরু হল তার যাত্রা।
ধীরে ধীরে, একে একে,
নিজের চেষ্টায়, নিজের ভাবনা আর শব্দ দিয়ে,
হনুমান্ত লিখল তার প্রথম কবিতা।
আর সেই দিন, সেই মুহূর্তে,
হনুমান্ত আর সাধারণ ছেলে থাকল না।
সে হয়ে উঠল “কবি হনুমান্ত”।
তার কবিতাগুলো ছিল মজার, প্রাণবন্ত, আর নন-ভেজ খাবারের গল্পে ভরপুর।
“আনন্দের প্রতীক” হওয়ার যাত্রা
ধীরে ধীরে, কিন্তু দৃঢ়তার সঙ্গে, হনুমান্ত হয়ে উঠল
সেই সময়ের “আনন্দের প্রতীক”।
কারণ, সে জানত কিভাবে সাধারণ মুহূর্তগুলোকে অসাধারণ অভিজ্ঞতায় রূপান্তরিত করতে হয়।
সেই সাধারণ নন-ভেজ খাবারের গল্পকে কবিতার মাধ্যমে এমনভাবে উপস্থাপন করত,
যা শ্রোতাদের মনে গভীর আনন্দের ঢেউ তুলে দিত।
তার কবিতাগুলো শুধু হাসির খোরাক নয়,
বরং ছিল সেই সময়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রদের জীবনের এক টুকরো আয়না।
তার প্রতিটি শব্দ যেন বলত:
“পাতে যদি থাকে মাছের মুড়ো আর মাংসের ঝোল,
জীবনের সব চাপ যাবে দূর—সাবধান, কেউ রসনা কাড়তে নাও তোলে রোল!”
হনুমান্ত তার সৃষ্টিশীলতার জগতে নিজেকে এমনভাবে গড়ে তুলল যে,
সে শুধু কবি নয়, হয়ে উঠল একজন বিনোদনের স্রষ্টা।
তার কবিতাগুলো শুধু নন-ভেজ খাবারের কথা বলত না,
বলত সেই সময়ের ছাত্রজীবনের আবেগ, গল্প, আর বন্ধুত্বের কথা।
এইভাবেই, হনুমান্ত হয়ে উঠল সেই সময়ের এক অদ্বিতীয় চরিত্র।
তবে, এখানেই কি তার যাত্রা শেষ?
নাকি তার ভেতরের শিল্পী আরও বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখছে?
এই প্রশ্নের উত্তর জানতে, চোখ রাখুন মাসিমার ঝুলির পরবর্তী অধ্যায়ে।
সেখানে অপেক্ষা করছে আরও চমকপ্রদ গল্প।
ততক্ষণ পর্যন্ত, মনে রাখুন: সাধারণ কিছুই যদি অসাধারণ হয়ে ওঠে, তবে তা হয় সৃষ্টিশীলতার স্পর্শে।
ঝুলির পরবর্তী গল্পে।
সেই গল্পে উঠে আসবে হনুমান্ত দাসের জীবনের আরও এক অদ্ভুত মোড়!
অধ্যায় ৪: “নন-ভেজ কবিতার রাজা থেকে শিল্পের নতুন অধ্যায়”
শিবপুর BE কলেজের এক অনন্য নক্ষত্র, হনুমান্ত দাস।
তার নন-ভেজ থিমে লেখা কবিতাগুলো কেবল মজার গল্প নয়,
তাতে ছিল বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্ত, ইঞ্জিনিয়ারিং জীবনের চাপমুক্তির গল্প,
আর নন-ভেজ খাবারের প্রতি এক অসীম ভালোবাসা।
তার কবিতাগুলো যেন শ্রোতাদের মনে সুখের ঢেউ তুলত।
হনুমান্তের নন-ভেজ কবিতার রাজত্ব:
তখনকার দিনে, ছাত্রজীবন মানেই ছিল পড়াশোনা আর চাপ।
কিন্তু হনুমান্ত?
সে যেন সেই চাপের মধ্যেই এক আনন্দের দুনিয়া তৈরি করল।
তার কবিতায় উঠে আসত মুরগির ঝোল, মাছের কাঁটা আর বিরিয়ানির গল্প।
প্রতিটি শব্দ যেন তার শ্রোতাদের চোখের সামনে সাজিয়ে তুলত
একটা প্লেট ভরা গরম গরম মাংসের বিরিয়ানি।
তার বিখ্যাত লাইনগুলোর মধ্যে একটি ছিল:
“মাংসের পাতুরি, আর কাবাবের ঘ্রাণ,
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের টেনশন সব করে উড়ান।”
এই ধরনের মজার আর প্রাণবন্ত লাইনগুলো তাকে
শিবপুর BE কলেজের ছাত্রদের কাছে এক আইকন করে তুলেছিল।
অসাধারণ সাফল্যের গল্প:
হনুমান্তের কবিতাগুলো শুধু বিনোদন ছিল না,
সেগুলো ছিল এক ধরনের থেরাপি।
তার কবিতা শোনার পর ছাত্রদের মুখে হাসি ফুটত,
তারা তাদের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেত।
কিন্তু… এখানেই কি শেষ?
হনুমান্ত কি শুধু নন-ভেজ কবিতার কবি হয়েই থেমে থাকবে?
নাকি তার ভেতরের শিল্পী আরও বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখছে?
এক নতুন দিগন্তের খোঁজ:
তখন থেকেই হনুমান্ত বুঝতে শুরু করলেন,
কবিতা তার কাছে শুধু মজার বিষয় নয়, বরং একটা গভীর আবেগ।
সে ভাবল, “যদি আমি শুধুই মজার কবিতা লিখি, তবে কি আমার সৃষ্টিশীলতার সীমা সেখানেই শেষ?”
এই প্রশ্নই তার জীবনে নিয়ে এল এক নতুন মোড়।
সে শুরু করল এক নতুন ধারা—
নন-ভেজের মজার কবিতা ছাড়াও,
মানুষের জীবনের গভীর অনুভূতি আর সম্পর্ক নিয়ে লিখতে।
তার একটি বিখ্যাত লাইন ছিল:
“জীবনের থালা, কখনো নন-ভেজ, কখনো নিরামিষ,
কিন্তু প্রতিটি কামড়ে লুকিয়ে থাকে জীবনের আসল রস।”
অধ্যায় শেষ নয়, এটা এক নতুন শুরু:
হনুমান্ত তার নন-ভেজ কবিতার জন্য পরিচিতি পেলেও,
সে ধীরে ধীরে তার কবিতায় নতুন মাত্রা আনতে শুরু করল।
তার কবিতা হয়ে উঠল আরও গভীর, আরও প্রাণবন্ত।
এটা যেন তার নিজের মধ্যেই এক “রূপান্তরের গল্প”।
কিন্তু এরপর কী হবে?
এই নতুন ধারা কি তাকে আরও বড় মঞ্চে নিয়ে যাবে?
নাকি তার নন-ভেজ কবিতার জগতেই সে ফিরে আসবে?
এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির হবে মাসিমার ঝুলির পরবর্তী গল্প।
ততক্ষণ পর্যন্ত, মনে রাখুন:
“সৃষ্টি কখনো থেমে থাকে না, তার প্রতিটি বাঁকে থাকে এক নতুন গল্প।”
অধ্যায় ৫: “রহস্যময় সাক্ষাৎ এবং এক নতুন যাত্রার শুরু”
[এক রহস্যময় সাক্ষাৎ: মোড় ঘোরার মুহূর্ত]
একদিন, সূর্য ডোবার ঠিক আগে, কলেজ ক্যাম্পাসের এক কোণে হনুমান্তের সঙ্গে ঘটে এক অদ্ভুত ঘটনা।
তার দেখা হয় এক পুরোনো সিনিয়রের সঙ্গে—একজন শান্ত, জ্ঞানী এবং মায়াময় ব্যক্তিত্ব।
সেই সিনিয়র হনুমান্তের দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন,
“তুমি কি জানো, তুমি যা করছ, তার প্রভাব কী?”
হনুমান্ত থমকে গেল।
সিনিয়রের কণ্ঠস্বর ছিল নরম, কিন্তু তাতে ছিল এমন এক গভীরতা,
যা যেন তার আত্মাকে নাড়া দিয়ে গেল।
“এই কবিতাগুলো মজার লাগছে, ঠিক,” তিনি বললেন,
“কিন্তু এগুলো কি তোমার নিজের এবং অন্যদের জীবনে কোনো গভীর প্রভাব ফেলছে? তুমি কি সেটা বুঝতে পারছ?”
সেই মুহূর্তে হনুমান্তের মনে যেন ঝড় উঠল।
যা একসময় নিছক মজা ছিল, তা এখন ভারী লাগতে শুরু করল।
অতীতের প্রতিটি কৌতুক যেন তার সামনে ধ্বংসস্তূপের মতো পড়ে রইল।
কখনো তিনি তার কাজের প্রভাব নিয়ে ভাবেননি।
কিন্তু সেই রাতে, তার মনে হলো, “আমি কি ঠিক করেছি? নাকি কিছু ভুল করে ফেলেছি?”
[অদ্ভুত পাপমোচন: অজানার পথে যাত্রা]
সেই রাত ছিল এক ঘোরলাগা রাত।
নিজের ঘরে একা বসে হনুমান্ত ভেঙে পড়ল।
সে মনের গভীর থেকে কাঁদল, আর একটাই প্রশ্ন তার মনে জাগল,
“আমি কীভাবে বদলাতে পারি? আমি কীভাবে আমার করা ভুলগুলো ঠিক করতে পারি?”
নীরবতার মধ্যে হঠাৎ যেন একটি কণ্ঠ তার মনে ফিসফিস করে বলল,
“তুমি সবসময় বদলাতে পারো। নীরবতায় বসো। চিন্তা করো। ধ্যান করো।”

পরের দিন ভোরবেলা, হনুমান্ত উঠে বসল।
তার মনের মধ্যে এক অদ্ভুত পরিবর্তন কাজ করছিল।
তিনি নিজের জন্য একটি নতুন পথ খুঁজে পেলেন—ধ্যান।
প্রতিদিন তিনি নীরবতায় বসে নিজের ভেতরের অস্থিরতাকে বুঝতে চেষ্টা করলেন।
ধীরে ধীরে তার মন শান্তি খুঁজে পেল।
যে বিদ্রোহী কবি একসময় অশান্তিতে ভরা ছিল,
সে এখন নিজের অন্তরে শান্তি খুঁজে পাচ্ছিল।
[অবিশ্বাস্য রূপান্তর: বিশৃঙ্খলা থেকে লক্ষ্যে]
বছরের পর বছর কেটে গেল।
হনুমান্ত ধীরে ধীরে তার পুরোনো পরিচয় ভুলে গেল।
যে মানুষটি একসময় সাহসী নন-ভেজ কবিতা লিখতেন,
যে কবি একসময় হাসি আর মজার মধ্য দিয়ে মানুষের মন জয় করত,
তিনি এখন তিনি এক নতুন মানুষ।
কিন্তু এরপর কী হবে?
এই নতুন রূপ কি হনুমান্তকে আরও বড় কোনো দিগন্তের সন্ধান দেবে?
নাকি তার পুরনো কবিতার জগতেই সে আবার ফিরে আসবে?
এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির হবে মাসিমার ঝুলির পরবর্তী গল্প।
ততক্ষণ পর্যন্ত, মনে রাখুন:
“প্রত্যেক যাত্রার শেষে থাকে আরেকটি শুরু, এবং প্রতিটি পরিবর্তনের মাঝে লুকিয়ে থাকে এক নতুন সম্ভাবনা।”

অধ্যায় ৭: “রহস্যময় জানালার ওপারে”
[এক অদ্ভুত সাক্ষাৎ]
রাতে চাঁদের আলো ঠিকরে পড়ছে পুরনো বিল্ডিংগুলোর ওপর।
সেই নিস্তব্ধতার মাঝে হনুমান্তের পা ধীরে ধীরে এগোচ্ছে, আর হঠাৎ করেই সামনে এলেন তিনি—সৌরভ।
সেই পুরোনো সিনিয়র।
চোখে শান্তি, মুখে মিষ্টি হাসি, কিন্তু দৃষ্টিতে যেন কোনো গভীর রহস্য।
“তুমি কি জানো, তোমার ভেতরে যে শক্তি লুকিয়ে আছে, তা বের করতে হলে,
তোমাকে একটা জানালা দেখতে হবে?”
সৌরভের কণ্ঠস্বর ধীরে ধীরে যেন বাতাসে মিশে গেল।
হনুমান্ত চমকে উঠে বলল, “জানালা? কিসের জানালা?”
সৌরভ একটা কাগজ এগিয়ে দিল।
এতে আঁকা ছিল একটা চারকোণা ছবি।
তাতে চারটি বাক্স।
প্রতিটি বাক্স যেন কোনও গোপন রহস্যের দরজা খুলছে।
[জোহারি উইন্ডোর রহস্যময় দুনিয়া]

সৌরভ বললেন,
“এটাকে বলে ‘The Johari Window’।
এটা একটা জানালা, যেটা তোমাকে তোমার ভেতরের আসল শক্তি খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
তোমার যা ক্ষমতা, যা প্রতিভা, তুমি নিজেই জানো না।
এই জানালা সেই গোপন দিকগুলো খুলে দেবে।”
হনুমান্ত স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
তার মনে হচ্ছিল, এই জানালা তার জীবনের নতুন অধ্যায়ের চাবিকাঠি।
সে ফিসফিস করে বলল,
“কিন্তু কীভাবে? এই জানালা কীভাবে কাজ করে? এর চারটা অংশের মানে কী?”
[প্রথম দরজা: Open Arena (Known to Self and Others)(সবার জানা)]
সৌরভ কাগজে প্রথম অংশে আঙুল রাখলেন।
“এটা হলো ওপেন আরিনা।
এখানে রয়েছে সেই দিকগুলো,এটা সেই অংশ, যা তুমি নিজেও জানো, এবং অন্যরাও জানে। এটা তোমার প্রকাশিত পরিচয়।

তিনি হাসতে হাসতে উদাহরণ দিলেন,
“তুমি কবিতা লিখতে পারো, সবাই তা জানে।
তোমার নন-ভেজ কবিতাগুলো কলেজে বিখ্যাত ছিল।
এটাই তোমার ওপেন আরিনা Open Arena।”তুমি এবং অন্যরা দুজনেই এই গুণ সম্পর্কে সচেতন।
হনুমান্ত একটু হেসে বলল, “হ্যাঁ, এটা তো সত্যি।”
[দ্বিতীয় দরজা: ব্লাইন্ড আরিনা (অজানা কিন্তু সবার জানা)]Blind Arena (Unknown to Self, Known to Others)]
সৌরভ এবার দ্বিতীয় অংশ দেখালেন।
“এটা ব্লাইন্ড আরিনা Blind Arena।
এখানে রয়েছে সেই দিক, যা তুমি নিজে জানো না, কিন্তু অন্যরা জানে।”এটা তোমার অজানা দিক, যা অন্যরা দেখতে পায়।
তিনি গভীর কণ্ঠে বললেন,
“তুমি জানো না, তোমার কবিতাগুলো শুধু হাসি আর মজার নয়।
তোমার কথা অনেকের জীবনে প্রভাব ফেলেছে।
তোমার বন্ধুরা এটা জানত, কিন্তু তুমি জানো না।”
হনুমান্ত একটু থমকে গেল।
“তাহলে আমি আমার প্রভাব সম্পর্কে জানিই না?”
সৌরভ হেসে বললেন,
“ঠিক তাই। কখনো কখনো মানুষ তোমাকে যে চোখে দেখে, সেটা তুমি বুঝতে পারো না।”তোর কবিতাগুলো শুধু মজার নয়, তুই আমাদের কঠিন সময়ে বাঁচতে শিখিয়েছিস।”
এটাই Blind Arena—তোমার অজানা দিক, যা অন্যরা বুঝতে পারে।
[তৃতীয় দরজা: হিডেন আরিনা (নিজের লুকানো দিক)]Hidden Arena (Known to Self, Unknown to Others)]
“এটা হলো সেই অংশ, যা তুমি জানো, কিন্তু অন্যরা জানে না।”এটা হলো তোমার লুকানো সত্য, যা তুমি শেয়ার করো না।

সৌরভ উদাহরণ দিলেন,
“তোমার মনের গভীরে লুকিয়ে আছে এক অজানা দুনিয়া…”
তুমি কি জানো, তোমার মনের ভেতর এমন অনেক কিছু আছে যা কেউ জানে না?
হয়তো তুমিও না!
তুমি হয়তো দিনের পর দিন তোমার কষ্ট, স্বপ্ন, আর অনুভূতিগুলো নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখো।
তোমার হৃদয়ে জমে থাকা সেই কথাগুলো তুমি কখনো কাউকে বলো না।
তোমার হাসির আড়ালে হয়তো লুকিয়ে আছে এক অসমাপ্ত কান্না।
তোমার সৃষ্টিশীলতা, তোমার চিন্তাগুলো হয়তো তোমার একান্ত নিজস্ব,
যা তুমি শেয়ার করতে পারো না,
যা তোমার মনের এক গোপন কোণে সুরক্ষিত আছে।
“তুমি কী অনুভব করো?”
কেউ কখনো জানে না।
তুমি হয়তো কোনো একটা কবিতা, একটা লাইন,
কিংবা তোমার ভেতরের ভাবনাকে লুকিয়ে প্রকাশ করো।
তোমার সৃষ্টিশীলতা যেন এক গুপ্তধন, যা তুমি কেবল নিজের জন্য লুকিয়ে রাখো।
হনুমান্ত গভীরভাবে ভাবতে লাগল।
“এটা ঠিক। আমি অনেক কিছু কারো সাথে শেয়ার করি না।”
সৌরভ বললেন,
“যদি তুমি এই লুকানো দিকগুলো শেয়ার করো,
তাহলে তোমার সৃষ্টিশীলতা আরও গভীর হয়ে উঠবে।”
এটাই Hidden Arena—তোমার ব্যক্তিগত অনুভূতি, যা তুমি গোপন রাখো।
[চতুর্থ দরজা: আননোন আরিনা (অজানা দুনিয়া)]Unknown Arena (Unknown to Self and Others)]
সৌরভ চতুর্থ অংশে আঙুল রাখলেন।
“এটা হলো আননোন আরিনা Unknown Arena।এটা সেই অংশ, যা তুমি নিজেও জানো না, এবং অন্যরাও জানে না।
এখানেই লুকিয়ে আছে তোমার আসল শক্তি।”

তার কণ্ঠস্বর যেন আরও রহস্যময় হয়ে উঠল।
“তুমি নিজেও জানো না, তুমি কতটা করতে পারো।
তোমার ভেতরের সম্ভাবনা অসীম।
তোমার কাজ হলো এই অজানা শক্তিকে খুঁজে বের করা।”
হনুমান্ত স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
তার মনে হচ্ছিল, এই জানালার শেষ দরজা তাকে এক নতুন দিগন্তের দিকে নিয়ে যাবে।
[এক নতুন যাত্রার শুরু]
সৌরভচুপকরেছিলকিছুক্ষণ।
তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, যেন তার মনে জমা আছে হাজারো কথা,
কিন্তু তার ঠোঁট থেকে বের হচ্ছে শুধু কিছু বেছে নেওয়া শব্দ।
তার মুখে এক অদ্ভুত শান্তি।
তবে সেই শান্তির আড়ালে যেন লুকিয়ে ছিল এক গভীর রহস্য।
হঠাৎ, তার কণ্ঠস্বর আরও গভীর হয়ে উঠল।
সে বলল,
“এটাহলোআননোনআরিনা Unknown Arena।একঅজানাদুনিয়া, যাতোমারমধ্যেইলুকিয়েআছে।তুমিজানোনা,
তোমারভেতরকীকীশক্তিলুকিয়েরয়েছে।আরমজারবিষয়হলো,
অন্যরাওএটাজানেনা।তোমারএইলুকানোঅংশেইরয়েছেতোমারআসলসম্ভাবনা।তোমারজীবনেরসবচেয়েবড়শক্তি।“
হনুমান্তেরশরীরশিহরিতহয়েউঠল।
তার মনে হলো, সৌরভের প্রতিটি শব্দ যেন তার আত্মাকে স্পর্শ করছে।
তার ভেতরের এক অস্থির ভাব ধীরে ধীরে গভীর চিন্তায় বদলে যাচ্ছিল।
সে ফিসফিস করে বলল,
“কিন্তু… এইঅজানাশক্তিআমিকীভাবেখুঁজেপাব?”
সৌরভের চোখে এবার এক রহস্যময় ঝিলিক ফুটে উঠল।
তার মুখে এক চিলতে হাসি।
তার কণ্ঠে আরও গভীরতা মিশে গেল।
সে বলল,
“তুমিজানোনা, তুমিকতকিছুকরতেপারো।তোমারভেতরেরশক্তিঅসীম।তোমারকাজহলোএইজানালারপর্দাসরানো।এইঅজানাশক্তিকেখুঁজেবেরকরা।“
“তুমিযাভাবছো, তুমিতারথেকেওবেশি…”
সৌরভ থেমে আবার বলল,
**”তুমি হয়তো ভাবো, তুমি একজন ইঞ্জিনিয়ার।
তুমি একজন কবি, একজন লেখক।
তুমি হয়তো নিজেকে খুব সাধারণ মনে করো।
কিন্তু তুমি জানো না, তুমি কেবল একজন নও।
তোমার ভেতরে রয়েছে বহু প্রতিভার বীজ।
তুমি অনেক কিছু করতে পারো,
এমন অনেক কিছু, যা তুমি কল্পনাও করোনি।
তোমার কবিতা, তোমার লেখাগুলো শুধু শব্দ নয়,
ওগুলো মানুষের জীবনে দিশা দেখাতে পারে।
তোমার কথা মানুষের মনে আলো এনে দিতে পারে।
তুমি জানো না, তোমার এক-একটি লাইন
কত মানুষের হৃদয়ে পরিবর্তনের বীজ বপন করেছে।”**
হনুমান্তেরমনেপড়েগেলরামায়ণেরসেইদৃশ্য।
যেখানে জাম্বুবান হনুমানকে তার অজানা শক্তির কথা মনে করিয়ে দেন।
হনুমান তখনই নিজের শক্তি খুঁজে পায়,
আর একের পর এক অসাধারণ কাজ করে ফেলে।
হনুমান্ত স্তব্ধ হয়ে গেল।
তার চোখের সামনে যেন সেই পুরনো দৃশ্য ভেসে উঠল।
সে ফিসফিস করে বলল,
“আমিকিসত্যিইকিছুকরতেপারি… হনুমানেরমতো?”
সৌরভ হেসে বলল,
তুমি নিজেই জানোনা, তোমারশক্তিকতটা।তুমিশুধুসেইজানালারপর্দাসরানোরঅপেক্ষায়আছো।তোমারশক্তিতখনইবেরিয়েআসবে,
যখনতুমিসাহসকরেসেইজানালারওপারেযেতেচাইবে।“
“তুমিকীভাবেখুলবেসেইজানালা?”
হনুমান্তেরমনেহলো, তারসামনেএকনতুনদরজাখুলছে।
কিন্তু সেই দরজা পার হওয়ার পথটা এখনো অন্ধকারে ঢাকা।
সে ধীরে ধীরে মাথা নাড়ল।
তার চোখে ছিল মিশ্র আবেগ—ভয় আর উত্তেজনা।
“কিন্তুএরপরকীহবে?”
এই জানালা কি সত্যিই হনুমান্তকে তার ভেতরের শক্তি দেখাবে?
নাকি এই যাত্রা তাকে আরও বড় চ্যালেঞ্জের দিকে নিয়ে যাবে?
এই প্রশ্নের উত্তর জানতে অপেক্ষা করুন মাসিমার ঝুলির পরবর্তী গল্পে।
ততক্ষণ পর্যন্ত, মনে রাখুন:
“প্রত্যেক অজানা জানালার ওপারে লুকিয়ে থাকে এক নতুন দুনিয়া।
তোমার কাজ হলো সেই জানালা খুলে সেই দুনিয়াকে আলিঙ্গন করা।“