ব্রাহ্মণ ও তিন ঠগের গল্প
কখনও ভেবে দেখেছেন?
আপনি কি নিজেকে অপ্রয়োজনীয় কথার বোঝা থেকে মুক্ত করতে পারেন?
জীবনের পথে আমরা নিত্যদিন অসংখ্য মানুষের সাথে দেখা করি। কেউ প্রশংসা করবে, কেউ সমালোচনা করবে, আবার কেউ নীরবে বিষ ছড়াবে। 🐍
সবাই আপনার মঙ্গল চায়—এমনটা নয়।
👉 আপনি যা করবেন, বলবেন, বা যেভাবে বাঁচবেন—সবকিছুর জন্যই থাকবে সমালোচক।
কেউ ভুল বুঝবে, কেউ আপনাকে টেনে নামাতে চাইবে, আবার কারও হাসি-ঠাট্টার আড়ালে লুকিয়ে থাকবে ঘরের শত্রু বিভীষণ।
তাহলে প্রশ্ন একটাই—
কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন এই নেতিবাচকতার ঝড় থেকে?
🔥 কল্পনা করুন…
আপনি আপনার স্বপ্নের পথে এগোচ্ছেন।

কিন্তু চারপাশ থেকে শুনছেন—
- “তুই পারবি না।”
- “এটা করে কী হবে?”It is simple time pass.
- “Don’t try this… this is not your cup of tea!”
এমন কথা কি আপনাকে থামিয়ে দেয়?
নাকি আপনি সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যান?
যদি থেমে যান—তাহলে আজকের গল্প শুধু আপনার জন্য।
💡 প্রথম পাঠ: ইগনোর করার শিল্প
নিজেকে রক্ষা করার সবচেয়ে বড় উপায় হলো—সব কথা শোনার দরকার নেই, সব কিছুর উত্তর দেওয়ারও দরকার নেই।
👉 এটা দুর্বলতা নয়, বরং নিজের মানসিক শান্তি আর আত্মশক্তির প্রতি দায়িত্বশীল থাকা।
কারণ জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো—
আপনার নিজের শান্তি, আত্মবিশ্বাস আর অভ্যন্তরীণ শক্তি।
এটাই আপনার ঢাল, যা আপনাকে রক্ষা করবে।
🚫 কিছু মানুষ কখনও বদলাবে না
👉 তারা আপনার খুশি দেখে হিংসা করবে।
👉 সহানুভূতির মুখোশ পরে ভিতরে ভিতরে বিষ ছড়াবে।
👉 আপনার পতনের অপেক্ষায় থাকবে।
এমন মানুষদের হাতে নিজের শান্তি তুলে দেবেন না।
তাদের সাথে অপ্রয়োজনীয় তর্কে যাবেন না, বোঝাতে যাবেন না।
কারণ—
আপনার রেসপন্সই আপনার শক্তি।
🌿 আসল মানুষগুলোকে চিনুন
যারা সত্যিই আপনার মঙ্গল চায়—
পরিবার, কয়েকজন সত্যিকারের বন্ধু, যাদের সামনে আপনি স্বচ্ছ আয়নার মতো হতে পারেন।
শুধু তাদের সঙ্গেই ভাগ করে নিন আপনার মনের কথা।
বাকি পৃথিবীকে?
প্রয়োজনে ঝেড়ে ফেলুন।
🌟 সত্যিকারের বুদ্ধিমত্তা
👉 প্রকৃত জ্ঞানী জানেন—
কাকে উত্তর দিতে হয়, আর কাকে নয়।
নেতিবাচকতার গর্তে নেমে শক্তি অপচয় করবেন না।
বরং—
📖 একটি ভালো বই পড়ুন, 🎶 গান শুনুন, 🌱 গাছ লাগান, 🧘♂️ ধ্যান করুন,
অথবা একটু চুপ করে সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলুন।
এসব কাজ আপনাকে ফিরিয়ে দেবে নিজের কাছে।
জীবনের পথে সমালোচনা, উপহাস আর নেতিবাচকতা আসবেই।
কিন্তু যদি আপনি নিজেকে রক্ষা করার শিল্প আয়ত্ত করেন—
তাহলে কোনো ঝড়ই আপনাকে ভাঙতে পারবে না।
মনে রাখুন—
👉 আপনার শান্তি, আপনার শক্তি, আপনার স্বপ্ন—সবই আপনার নিজের হাতে।
নিজেকে রক্ষা করুন, স্থির থাকুন, আর পৃথিবীকে জয় করুন। 🌍💪
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম একটা গল্প শোনাবো।
কিন্তু তার আগে হৃদয়ের কিছু কথা, কিছু শিক্ষা ভাগ করে নিলাম।
এবার মন ছুঁয়ে যাবে এমনই এক গল্পের পথে হাঁটা শুরু করি… 🌹📖
Title : ব্রাহ্মণ ও তিন ঠগের গল্প
এক শহরে থাকতেন এক ব্রাহ্মণ, নাম মনোজ শর্মা। লোকজনের হয়ে পূজা-অর্চনা করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। একদিন এক ধনী ব্যক্তি, যার হয়ে তিনি পূজা করেছিলেন, খুশি হয়ে তাঁকে একটি ছাগল উপহার দিলেন। মনোজবাবু খুবই আনন্দে ছাগলটাকে কাঁধে তুলে বাড়ির পথে রওনা হলেন।

এমন সময় পথের ধারে তিনজন ধূর্ত লোক—রোহিত, করণ আর বিবেক—ওই ব্রাহ্মণকে দেখে ফন্দি আঁটল। তারা ভাবল, “যেভাবেই হোক, এই ছাগলটা আমাদের হাতেই আসতে হবে।”
প্রথমে এগিয়ে এলো রোহিত। সে ব্রাহ্মণের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল—
“আরে ওহে ব্রাহ্মণমশাই! ব্যাপারটা কি? আপনি কাঁধে একটা কালো কুকুর নিয়ে যাচ্ছেন নাকি? লোকে দেখে হাসাহাসি করবে তো!”

রোহিতের এই কটাক্ষ শুনে মনোজবাবু রেগে আগুন। তিনি বললেন—
“তুই কি অন্ধ নাকি? চোখে দেখতে পাচ্ছিস না, এটা ছাগল, কুকুর নয়?”
রোহিত তখন হেসে বলল—
“আচ্ছা আচ্ছা, আপনি রাগ করছেন কেন? আমি তো শুধু যা দেখেছি তাই বললাম। না বিশ্বাস করলে আপনার ইচ্ছা।”
মনোজবাবু ক্ষুব্ধ মনে একটু এগিয়ে গেলেন। কিছুদূর যেতেই করণ সামনে এসে প্রণাম করে বলল—
“প্রণাম ব্রাহ্মণমশাই! কিন্তু এটা কী! আপনি কাঁধে একটা মরা বাছুর নিয়ে ছুটছেন কেন? লোকে কী বলবে?”
এবার ব্রাহ্মণ চিৎকার করে উঠলেন—
“তুই বোকা নাকি? ছাগল আর বাছুর চিনতে পারিস না? তুই তো একেবারে নির্বোধ!”
করণ শান্ত গলায় বলল—
“আমি যা দেখেছি, তাই বলেছি। আপনি যদি এটাকে জীবন্ত ছাগল ভেবে খুশি থাকেন, তাতেই ভালো।”
মনোজবাবুর মনে এবার সন্দেহের বীজ বোনা শুরু হল। “আচ্ছা, সত্যিই তো, এটার মুখটা ঠিক ছাগলের মতোই তো?”—তিনি একবার পাশ থেকে তাকালেন।
এরপর সামনে এসে দাঁড়াল বিবেক। সে হাসতে হাসতে বলল—
“ধিক্কার! কী লজ্জার ব্যাপার! ব্রাহ্মণমশাই কাঁধে গাধা নিয়ে যাচ্ছেন! লোকে তো বলবে—‘ব্রাহ্মণের কাঁধে গাধা!’”
এবার মনোজবাবু ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়লেন।
মনে মনে ভাবতে লাগলেন—
“আরে! এ কেমন কথা! তিনজন তিন রকম কথা বলছে!
কেউ বলছে কুকুর, কেউ বলছে বাছুর, কেউ আবার গাধা!
তাহলে কি আমাকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে? এটা কি আসলেই ছাগল?
না কি… এটা আসলে এক মায়াবী ভূত?” 👻😨
দ্বিধা আর ভয়ের চাপে জড়সড় হয়ে গেলেন তিনি।
শেষমেশ ছাগলটাকে মাটিতে নামিয়ে রেখে,
ভারি চিন্তায় ডুবে, একরকম confused হয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা দিলেন… 🚶♂️

আর সেই মুহূর্তেই,
ওই তিন ধূর্ত একসঙ্গে খিলখিল করে হেসে উঠলো—
🤣 “হাহাহা!”
তারপর বিদ্যুৎগতিতে দৌড়ে ছাগল নিয়ে চম্পট দিল সেখান থেকে! 🐐💨
🌟 নীতিকথা:
একটা মিথ্যে কথা বারবার শুনতে শুনতে একসময় তা সত্যি বলে মনে হতে পারে।
কিন্তু মনে রাখবেন—
👉 অন্যের কথায় নয়, নিজের অন্তরের বিশ্বাসেই আসল শক্তি লুকিয়ে আছে।
নিজেকে বিশ্বাস করতে শিখুন, কারণ আত্মবিশ্বাসই হলো সত্য আর মিথ্যার মাঝে সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ।” ✨💪